প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে ধর্ষণ, শিশুধর্ষণ, গণধর্ষণ দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। আইন হচ্ছে, সাজা হচ্ছে। কিন্তু অবস্থা যথা পূর্বং তথা পরং । বরঞ্চ পরিস্থিতি মন্দের চেয়ে মন্দতর হচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে যে শুধুমাত্র ২০১২ সালেই বাংলাদেশে ৭৭১ জন নারী ( শিশু এবং বড় ) ধর্ষিতা হয়েছে , তন্মধ্যে গণধর্ষণের শিকার ১৫৭ জন আর ধর্ষণের পর খুন হয়েছে ১০৬ জন ( সূত্রঃ দৈনিক কালের কণ্ঠ, ১২-০১-২০১৩ )। এমন অবস্থা কী চলতেই থাকবে!
এত্থেকে কি নিস্তার নেই? খুবই যুক্তিসংগত একটি প্রশ্ন । তবে প্রশ্নটির জবাব খুঁজে পাওয়ার আগে আর একটি আত্নজিজ্ঞাসার উত্তর জানাটা অধিকতর জরুরীঃ আসলেই কি আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই ? আমরা কি প্রস্তুত আছি এমন একটি সমাজ তৈরির জন্য যেখানে থাকবে না ধর্ষণ কিংবা কোন ধরণের যৌন উক্তক্তকরণ
(eve teasing) ? আমাদের এই প্রস্তুতি কি যথার্থ ? না কি উহা কেবল স্লোগানসর্বস্ব ? প্রশ্নটি এই কারণে আসছে যে, ইদানীং নারী নির্যাতন বন্ধে নানা ধরণের সমাবেশ, সেমিনার, সিম্পজিয়াম ও মানববন্ধন হচ্ছে এবং আরও হয়তো হতে থাকবে। আমি এগুলোকে নিরুৎসাহিত করছি না । আমি ভাবছি এগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে। একটি স্বতঃসিদ্ধ কথা আছে : কোন সমস্যা সমাধান করতে হলে তার গভীরে যেতে হয়, টান দিয়ে উপড়ে ফেলতে হয় সমস্যার জড় সহ । অথচ সেই প্রচেষ্টা কোথাও দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না । বরং এর উল্টোটাই অনেক জায়গায় চোখে পড়ে, বিশেষ করে ঐ সকল স্থানে যেখানে N.G.O. দের ব্যানারে ঐ সমস্ত সভা-সম্মেলন হয়ে থাকে।
বিস্তারিত
আলোচনায় যাবার প্রাক্কালে আমি ক্রমাগত ধর্ষণ
বৃদ্ধি পাওয়ার কারণসমূহকে দুটো ভাগে ভাগ করছিঃ
Primary ( অর্থাৎ মূল বা প্রধান) কারণ ও
Secondary (অর্থাৎ শাখা বা দ্বিতীয় পর্যায়ের)
কারণ ।
বর্তমান সমাজে সবাই নজর/জোর দিচ্ছে Secondary কারণগুলোর উপর। Secondary কারণ বলতে আমি বুঝাতে চাইঃ
কারণ ।
বর্তমান সমাজে সবাই নজর/জোর দিচ্ছে Secondary কারণগুলোর উপর। Secondary কারণ বলতে আমি বুঝাতে চাইঃ
(১) আইনের শাসনের অনুপস্থিতি। বিচারের বাণী এদেশে
নিরবে কাঁদে। অপরাধীদের খুঁটির জোর থাকলে বেশীর ভাগ ঘটনার সঠিক ও দ্রুত বিচার হয়না ।
ধর্ষণের সেঞ্চুরী পালনকারী মানিকের বিচার এদেশে হয়নি। পরিমলের আর পান্না
মাস্টারের বিচার হবে এটা এক ধরণের দুরাশা । ফলে ধর্ষকরা ( এবং
অন্যান্য অপরাধীরাও ) বেপরোয়া
হয়ে যাচ্ছে । বাড়ছে অপরাধীর সংখ্যা ও অপরাধের সুত্র।
(২) আমাদের ( এবং পৃথিবীর আরো অনেক ) দেশে এক অদ্ভুত আইন আছেঃ যাদের বয়স ১৮ হয়নি, তারা শিশু। এই আইনটি কেবল অদ্ভুতই নয়, এটি উদ্ভট, হাস্যকর, অপরিণামদর্শী এবং এ জাতীয় সমস্ত বিশেষণের উপযোগী। কারণ এটি মানব প্রকৃতির সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্য বিহীন। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে ছেলেরা ১৫ বৎসর বয়সে এবং মেয়েরা ১২ বৎসর বয়সে যৌবন ( puberty) অর্জন করে। দুনিয়ার তাবৎ আইন দিয়েও এটা ঠেকানো যাবে না। অথচ এই আইনের ভাষায় যার বয়স ২ সেও শিশু, আবার যার বয়স ১৬ সেও শিশু। ২ বৎসরের শিশু সেক্স বুঝে না, তার যৌন ক্ষুধা নেই। অন্যদিকে ১৬ বৎসরের মেয়ে-ছেলে বিষয়টি ভাল করে বুঝে, তার শারীরিক চাহিদা আছে। অতএব, সে তার চাহিদা পূরণ করবেই, বৈধ বা অবৈধ যে পথেই হোক না কেন। আমরা ২ বৎসরের বাচ্চাকে বুড়ো বলতে পারি, ১৬ বৎসরের সন্তানকে শিশু ডাকতে পারি। এই ডাকাডাকির জন্য কি তার শারীরিক চাহিদা মিলিয়ে যাবে ? শিশুর সংজ্ঞা পাল্টানো তাই স্রেফ আত্ন প্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছু নয়। বরং এই আইনের ফলাফল এই দাঁড়াচ্ছে যে শারীরিক তাড়নায় ১৫ বৎসরের মানুষটি অপকর্ম/অপরাধ করবে, তারপর তথাকথিত ‘শিশু’ হওয়ার সুবাদে আইনের ফাঁক গলে বেড়িয়ে যাবে।
এই আইনের হাস্যকর দিকটি প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে সাম্প্রতিক সময়ের পুলিশ ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রীর হত্যাকাণ্ডে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায় যে, হেন কোন অপকর্ম নেই যেটা হত্যাকারী ‘ঐশী’ করে নি। অথচ সবাই গলদঘর্ম হয়ে গেল ‘ঐশী’ কি শিশু কী না সে বিষয় নিয়ে ! এ যেন রীতিমত ‘ঘোড়া হাসানো’ কাজ কারবার। সম্প্রতি ভারতে একটি গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ৫ জনের একজনকে বয়স কম ( যথা ১৭ বৎসর ) এই অজুহাতে মাত্র ৩ বৎসরের জেল দেয়া হয়েছে । অথচ আইন প্রণেতা ও প্রয়োগকারী , এদের কেউ ভাবল না যে ‘ধর্ষণ’ আর দশটি অপরাধের মত নয় । অনিচ্ছায় বা ঘটনাচক্রে মানুষ খুনও করতে পারে। কিন্তু বিনা ইচ্ছাতে কেউ ধর্ষণ করতে পারে না।
পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যে চোর চুরির মাল ফেরত দিয়েছে, ঘুষখোর ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছে, অন্যায়ভাবে মারপিটকারী মাফ চেয়েছে, এমন কি খুনিও অপরাধ স্বীকার করে ধরা দিয়েছে । কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন ধর্ষক স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করেছে এমন নজির পাওয়া যায় না। বরং ধর্ষক যতবার ধর্ষিতাকে দেখে ততবারই তার ধর্ষণের ইচ্ছা জাগ্রত হয়। আসলে Biophysical এবং Psychological কারণে সে এক্ষেত্রে নিজকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না । অনুশোচনা তো দূরের কথা, বরং একই অপরাধ বারংবার করতে চায়। সুতরাং বয়স কম এই অজুহাতে একজন ধর্ষককে কম সাজা দেয়ার ফল এটাই হবে যে কম বয়সী ধর্ষক দিন দিন বাড়বে। সচেতন পাঠকসমাজ লক্ষ্য করে থাকবেন যে, ভারতে ঐ ধরণের ঘটনা বর্তমানে অনেক বেড়ে গেছে। অর্থাৎ বিচার কিংবা শাস্তি প্রদানের ঐ রায় ধর্ষণ কমানোর ক্ষেত্রে কোন সুফল নিয়ে আসতে পারে নি। আর এর মূল কারণ একটিই, ‘প্রকৃতি যাকে যৌন ক্ষমতা সম্পন্ন যুবক’ বানিয়েছে মানুষেরা তাকে শিশু বলছে ! তারপরও ১৮ বছর বয়সীকে যারা শিশু ডাকার পক্ষপাতী, তাদের সমীপে সবিনয়ে একটি প্রশ্নঃ আপনার পাশের বাসার ২ বৎসরের শিশুটিকে আপনার স্ত্রী কোলে তুলে আদর করে। আপনার স্ত্রীকে পাশের বাসার ১৬ বৎসরের ছেলে শিশুটির সাথে একই কাজ করতে দেবেন কি ?
(২) আমাদের ( এবং পৃথিবীর আরো অনেক ) দেশে এক অদ্ভুত আইন আছেঃ যাদের বয়স ১৮ হয়নি, তারা শিশু। এই আইনটি কেবল অদ্ভুতই নয়, এটি উদ্ভট, হাস্যকর, অপরিণামদর্শী এবং এ জাতীয় সমস্ত বিশেষণের উপযোগী। কারণ এটি মানব প্রকৃতির সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্য বিহীন। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে ছেলেরা ১৫ বৎসর বয়সে এবং মেয়েরা ১২ বৎসর বয়সে যৌবন ( puberty) অর্জন করে। দুনিয়ার তাবৎ আইন দিয়েও এটা ঠেকানো যাবে না। অথচ এই আইনের ভাষায় যার বয়স ২ সেও শিশু, আবার যার বয়স ১৬ সেও শিশু। ২ বৎসরের শিশু সেক্স বুঝে না, তার যৌন ক্ষুধা নেই। অন্যদিকে ১৬ বৎসরের মেয়ে-ছেলে বিষয়টি ভাল করে বুঝে, তার শারীরিক চাহিদা আছে। অতএব, সে তার চাহিদা পূরণ করবেই, বৈধ বা অবৈধ যে পথেই হোক না কেন। আমরা ২ বৎসরের বাচ্চাকে বুড়ো বলতে পারি, ১৬ বৎসরের সন্তানকে শিশু ডাকতে পারি। এই ডাকাডাকির জন্য কি তার শারীরিক চাহিদা মিলিয়ে যাবে ? শিশুর সংজ্ঞা পাল্টানো তাই স্রেফ আত্ন প্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছু নয়। বরং এই আইনের ফলাফল এই দাঁড়াচ্ছে যে শারীরিক তাড়নায় ১৫ বৎসরের মানুষটি অপকর্ম/অপরাধ করবে, তারপর তথাকথিত ‘শিশু’ হওয়ার সুবাদে আইনের ফাঁক গলে বেড়িয়ে যাবে।
এই আইনের হাস্যকর দিকটি প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে সাম্প্রতিক সময়ের পুলিশ ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রীর হত্যাকাণ্ডে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায় যে, হেন কোন অপকর্ম নেই যেটা হত্যাকারী ‘ঐশী’ করে নি। অথচ সবাই গলদঘর্ম হয়ে গেল ‘ঐশী’ কি শিশু কী না সে বিষয় নিয়ে ! এ যেন রীতিমত ‘ঘোড়া হাসানো’ কাজ কারবার। সম্প্রতি ভারতে একটি গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ৫ জনের একজনকে বয়স কম ( যথা ১৭ বৎসর ) এই অজুহাতে মাত্র ৩ বৎসরের জেল দেয়া হয়েছে । অথচ আইন প্রণেতা ও প্রয়োগকারী , এদের কেউ ভাবল না যে ‘ধর্ষণ’ আর দশটি অপরাধের মত নয় । অনিচ্ছায় বা ঘটনাচক্রে মানুষ খুনও করতে পারে। কিন্তু বিনা ইচ্ছাতে কেউ ধর্ষণ করতে পারে না।
পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যে চোর চুরির মাল ফেরত দিয়েছে, ঘুষখোর ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছে, অন্যায়ভাবে মারপিটকারী মাফ চেয়েছে, এমন কি খুনিও অপরাধ স্বীকার করে ধরা দিয়েছে । কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন ধর্ষক স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করেছে এমন নজির পাওয়া যায় না। বরং ধর্ষক যতবার ধর্ষিতাকে দেখে ততবারই তার ধর্ষণের ইচ্ছা জাগ্রত হয়। আসলে Biophysical এবং Psychological কারণে সে এক্ষেত্রে নিজকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না । অনুশোচনা তো দূরের কথা, বরং একই অপরাধ বারংবার করতে চায়। সুতরাং বয়স কম এই অজুহাতে একজন ধর্ষককে কম সাজা দেয়ার ফল এটাই হবে যে কম বয়সী ধর্ষক দিন দিন বাড়বে। সচেতন পাঠকসমাজ লক্ষ্য করে থাকবেন যে, ভারতে ঐ ধরণের ঘটনা বর্তমানে অনেক বেড়ে গেছে। অর্থাৎ বিচার কিংবা শাস্তি প্রদানের ঐ রায় ধর্ষণ কমানোর ক্ষেত্রে কোন সুফল নিয়ে আসতে পারে নি। আর এর মূল কারণ একটিই, ‘প্রকৃতি যাকে যৌন ক্ষমতা সম্পন্ন যুবক’ বানিয়েছে মানুষেরা তাকে শিশু বলছে ! তারপরও ১৮ বছর বয়সীকে যারা শিশু ডাকার পক্ষপাতী, তাদের সমীপে সবিনয়ে একটি প্রশ্নঃ আপনার পাশের বাসার ২ বৎসরের শিশুটিকে আপনার স্ত্রী কোলে তুলে আদর করে। আপনার স্ত্রীকে পাশের বাসার ১৬ বৎসরের ছেলে শিশুটির সাথে একই কাজ করতে দেবেন কি ?
ধর্ষণের মূল কারণ
এই বিশ্ব
চরাচরে মানবজাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মৌলিক ভাবে দুটো বিষয়ের
প্রয়োজন: আহার গ্রহণ ও নারীপুরুষের যৌন
মিলন । অতঃপর এটা জানা দরকার যে বর্তমানে (এবং আদিকাল থেকেই) বিশ্বে নারীপুরুষের মিলনের ৩ ধরণের অবস্থা
পরিলক্ষিত হয়ঃ
(১) বিবাহ ;
(২) যেনা (উভয়ের পারস্পরিক সম্মতি আছে, তবে বিয়ে হয় নি)
বা ব্যভিচার ;
(৩) ধর্ষণ (যেখানে এক পক্ষ অন্য পক্ষের প্রতি জোর প্রয়োগ
করে)।
একটি বিস্ময়কর
ব্যাপার এই যে উপরোক্ত অবস্থা ত্রয়ের
মধ্যে পবিত্র ইসলাম ধর্ম কেবলমাত্র প্রথমটির অনুমোদন দিয়েছে। বাদবাকি সব
মতাদর্শে কেবল শেষটি নিয়েই আপত্তি। ২য় প্রথাটির বেলায় কেহ কেহ নিমরাজি, কেহবা আবার
উৎসাহদাতা। বর্তমান পাশ্চাত্য সভ্যতায় যেনা সর্বগ্রাসী রূপ
নিয়েছে। হারিয়ে যাচ্ছে বিবাহ। যেনাকে নাম দেয়া হয়েছে live
together. অথচ ইসলাম যেনাকে নিষিদ্ধ করেছে ;
যেনতেন ভাবে নয়, প্রচণ্ড কঠোরতার সাথে, ন্যূনতম ছাড় না দিয়ে।
অত্যন্ত পরিষ্কার ভাষায় আদেশ করা হয়েছেঃ
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا
আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়োনা। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং খুবই মন্দ পথ”। (১৭:৩২)
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا
আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়োনা। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং খুবই মন্দ পথ”। (১৭:৩২)
আল্লাহ্
তাআ’লা
আরও বলেনঃ
وَلا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ
“ নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য”। (৬:১৫১)
এই না যাওয়াটা কেমন ? কিভাবে ?
وَلا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ
“ নির্লজ্জতার কাছেও যেয়ো না, প্রকাশ্য হোক কিংবা অপ্রকাশ্য”। (৬:১৫১)
এই না যাওয়াটা কেমন ? কিভাবে ?
ইসলাম এই বিষয়টিও পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা করে দিয়েছে।
সেটা কি ?
ইসলাম বলে, সেটা হল দৃষ্টি সংযত রাখা ।
কুরআন-হাদীস দ্বারা বুঝা যায়, দৃষ্টি সংযত রাখা
একটি মৌলিক বিষয়। কোনো পুরুষের বেগানা
মহিলাদের দিকে দৃষ্টি দেয়া যেরূপ কবীরা গুনাহ; তদ্রুপ মহিলারও বেগানা পুরুষের দিকে
দৃষ্টি দেয়া কবীরা গুনাহ । পবিত্র হাদীছ শরীফ ইরশাদ হচ্ছে
:
“ যে দেখে এবং যে দেখায় উভয়ের প্রতি মহান আল্লাহ পাকের লা’নত।” (বাইহাক্বী, মিশকাত) ।
“ যে দেখে এবং যে দেখায় উভয়ের প্রতি মহান আল্লাহ পাকের লা’নত।” (বাইহাক্বী, মিশকাত) ।
লক্ষ্যণীয়
যে এখানে শুধু নর বা নারীকে উদ্দেশ্য করা হয়নি, উভয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অর্থাৎ যে দেখে সে (১) পুরুষ হতে পারে কিম্বা (২) নারীও হতে
পারে । আবার যে দেখায় সেও যেমন (১) নারী হতে পারে আবার (২) পুরুষও হতে পারে। অতএব,
উক্ত চার শ্রেণীই বর্ণিত গযবের অন্তর্গত ।
ইসলামী
শরীয়া মতে নিজের
স্ত্রী ছাড়া অন্য কাউকে নজর ভরে দেখা পুরুষের জন্য জায়েজ
নয়। তবে হঠাৎ
নজর পড়ে গেলে ক্ষমাযোগ্য। কিন্তু প্রথম দৃষ্টিতে আকর্ষণীয় মনে হলে সেখানে আবার
দৃষ্টিপাত করা ক্ষমার যোগ্য নয়।
হযরত বুরাইদাহ বর্ণনা করেছেন, নবী (সা) হযরত আলীকে (রা) বলেন, ''হে আলী! এক নজরের পর দ্বিতীয় নজর দিয়ো না। প্রথম নজর তো ক্ষমাপ্রাপ্ত কিন্তু দ্বিতীয় নজরের ক্ষমা নেই।'' ( আহমাদ,তিরমিযী, আবু দাউদ, দারেমী) ।
হযরত জারীর ইবনে আবদুল্লাহ বাজালী (রাঃ ) বলেন, আমি নবী (সা) কে জিজ্ঞেস করলাম, হঠাৎ চোখ পড়ে গেলে কি করবো৷ বললেন, চোখ ফিরিয়ে নাও অথবা নামিয়ে নাও। (মুসলিম, আহমাদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসাঈ) ।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণিত একটি হাদীস, নবী (সা) আল্লাহর উক্তি বর্ণনা করেছেনঃ ''দৃষ্টি হচ্ছে শয়তানের বিষাক্ত তীর গুলোর মধ্য থেকে একটি তীর, যে ব্যক্তি আমাকে ভয় করে তা ত্যাগ করবে আমি তার বদলে তাকে এমন ঈমান দান করবো যার মিষ্টি সে নিজের হৃদয়ে অনুভব করবে।'' (তাবারানী)
আবু উমামাহ রেওয়ায়াত করেছেন, নবী (সা) বলেনঃ ''যে মুসলমানের দৃষ্টি কোন মেয়ের সৌন্দর্যের ওপর পড়ে এবং এ দৃষ্টি সরিয়ে নেয়, এ অবস্থায় আল্লাহ তার ইবাদাতে বিশেষ স্বাদ সৃষ্টি করে দেন।'' (মুসনাদে আহমাদ)।
প্রশ্ন করা যেতে পারে, কেন দর্শনের বেলায় ইসলাম এত কঠোর কেন ? এর সোজা সাপটা উত্তর হল “ দর্শন থেকে যেনা/ ধর্ষণের সৃষ্টি হয়।” পবিত্র হাদীস শরীফে বিষয়টি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
"মানুষ তার সমগ্র ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে যিনা করে। দেখা হচ্ছে চোখের যিনা, ফুসলানো কন্ঠের যিনা, তৃপ্তির সাথে কথা শোনা কানের যিনা, হাত লাগানো ও অবৈধ উদ্দেশ্য নিয়ে চলা হাত ও পায়ের যিনা। ব্যভিচারের এই সব ভূমিকা যখন পুরোপুরি পালিত হয় তখন লজ্জাস্থানগুলো তাকে পূর্ণতা দান করে অথবা পূর্ণতা দান থেকে বিরত থাকে। (বুখারী , মুসলিম ও আবু দাউদ)।
বিষ খেলে
ভুগতে হবেই, এই অমোঘ বিধান কেঊ এড়াতে পারবে না। হয়তো এই ভোগান্তি কারো কারো বেলায়
সর্বশেষ স্তর মৃত্যু পর্যন্ত প্রলম্বিত হতে পারে। অবৈধ দর্শনের বেলাতেও একই কথা
খাটে। এটা ( নপুংসক নয় এমন ) মানুষের মধ্যে রিপু জাগ্রত করবেই। অতঃপর তার পরিণতি
যাহাই হোক না কেন ! আর যিনা/ধর্ষণ হচ্ছে তার
চূড়ান্ত পরিণতি।
আমি যখন
কলেজে ভর্তি হই, আমার এক শ্রদ্দেয় শিক্ষক ( মরহুম মাওলানা নাজিরুল্লাহ সাহেব ) আমাকে
কথায় কথায় বলেছিলেন,
“ বাবা, মহান আল্লাহ্ পাক মানুষকে শাহওয়াত (বা যৌন ক্ষমতা) নামক একটি শক্তি দিয়েছেন। মনে রাখবে এটা একটা atom bomb. এটাকে যে নিয়ন্ত্রণে রাখল, সে যেন একটা atom bomb কে নিষ্ক্রিয় করে রাখল। আর যে নিয়ন্ত্রণ করল না, সে যেন একটা atom bomb ফাটিয়ে দিল। এটাও বুঝে নাও যে atom bomb কে নিয়ন্ত্রন করা এত সহজ নয়। যদ্দিন এটা তৈরি করা না হয়, তদ্দিন যাবৎ মাথাও নাই, মাথা ব্যথাও নাই। কিন্তু atom bomb তৈরি করার পর ওটাকে নিয়ন্ত্রন করা অনেক কঠিন একটি কাজ। অনেক অনেক সতর্কতার প্রয়োজন হয়। ”
-শ্রদ্দেয় শিক্ষকের বাণীর তাৎপর্য সেদিন পুরোপুরি বুঝি নি। কেবল কথা কয়টি মস্তিষ্কে গেঁথে রেখেছি। আজ যখন এই ঘুণে ধরা সমাজের দিকে তাকাই তখন ঐ কথার ব্যাখ্যা দিনের পর দিন স্পষ্টতর হচ্ছে। পৃথিবীর সর্বত্র অনধিক ৭ বছরের ছেলেমেয়েরা একত্রে খায়-দায়-ঘুমায়-লেখাপড়া করে। কৈ কোথাও তো কোন অঘটন ঘটে না। কারণ তাদের মধ্যে atom bomb অর্থাৎ sex power তৈরি হয়নি। কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়মে একটি নির্দিষ্ট বয়সে পৌছার পর যখন কোন ছেলে/মেয়ে সাবালকত্ব ( puberty) অর্জন করে, তখন যদি সে যথোপযুক্ত সতর্কতা অবলম্বন না করে তবে অঘটন ঘটবেই ঘটবে।
“ বাবা, মহান আল্লাহ্ পাক মানুষকে শাহওয়াত (বা যৌন ক্ষমতা) নামক একটি শক্তি দিয়েছেন। মনে রাখবে এটা একটা atom bomb. এটাকে যে নিয়ন্ত্রণে রাখল, সে যেন একটা atom bomb কে নিষ্ক্রিয় করে রাখল। আর যে নিয়ন্ত্রণ করল না, সে যেন একটা atom bomb ফাটিয়ে দিল। এটাও বুঝে নাও যে atom bomb কে নিয়ন্ত্রন করা এত সহজ নয়। যদ্দিন এটা তৈরি করা না হয়, তদ্দিন যাবৎ মাথাও নাই, মাথা ব্যথাও নাই। কিন্তু atom bomb তৈরি করার পর ওটাকে নিয়ন্ত্রন করা অনেক কঠিন একটি কাজ। অনেক অনেক সতর্কতার প্রয়োজন হয়। ”
-শ্রদ্দেয় শিক্ষকের বাণীর তাৎপর্য সেদিন পুরোপুরি বুঝি নি। কেবল কথা কয়টি মস্তিষ্কে গেঁথে রেখেছি। আজ যখন এই ঘুণে ধরা সমাজের দিকে তাকাই তখন ঐ কথার ব্যাখ্যা দিনের পর দিন স্পষ্টতর হচ্ছে। পৃথিবীর সর্বত্র অনধিক ৭ বছরের ছেলেমেয়েরা একত্রে খায়-দায়-ঘুমায়-লেখাপড়া করে। কৈ কোথাও তো কোন অঘটন ঘটে না। কারণ তাদের মধ্যে atom bomb অর্থাৎ sex power তৈরি হয়নি। কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়মে একটি নির্দিষ্ট বয়সে পৌছার পর যখন কোন ছেলে/মেয়ে সাবালকত্ব ( puberty) অর্জন করে, তখন যদি সে যথোপযুক্ত সতর্কতা অবলম্বন না করে তবে অঘটন ঘটবেই ঘটবে।
কি সে সতর্কতা ?
মানুষের
একমাত্র খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক ঘোষণা করছেন,
“হে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), মু’মিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। আর আপনি মু’মিনাদেরকে বলুন, তারাও যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের ইজ্জত-আব্রুর হিফাযত করে ও তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে।”
[আল-কোরআনঃ সুরা-নূরঃ ২৪: ৩০-৩১]
“হে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), মু’মিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। আর আপনি মু’মিনাদেরকে বলুন, তারাও যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের ইজ্জত-আব্রুর হিফাযত করে ও তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে।”
[আল-কোরআনঃ সুরা-নূরঃ ২৪: ৩০-৩১]
অনেকে
প্রশ্ন তুলবেন যে, ৪/৫ বছরের মেয়েরাও ধর্ষিতা হচ্ছে । ঐ শিশুটির মধ্যে কি এমন ছিল
যে তাকেও ধর্ষিতা হতে হল। নিঃসংকোচে স্বীকার করব যে, ঐ শিশুটির মধ্যে তেমন কিছুই
ছিল না। ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, ৪/৫ বছরের শিশুরাতো বেহেশতের ফুল। যে হিংস্র দানবের
হিংস্র আঘাতে ফুলের মত শিশুটি ক্ষত-বিক্ষত
হল, ঐ দানবটিও একদা মানুষ ছিল। কিন্তু আজ সে দানব কিংবা পিশাচ। কিন্তু কেন ? এর
জন্য কি
: আর্মি স্টেডিয়ামে ভারতীয় শিল্পীদের অশ্লীল যৌন উত্তেজক গান (যেমন ‘সুনিধি চৌহান ইন ঢাকা , ০৪-০১-২০১৩) দায়ী নয় ?
: IPL / BPL এর নগ্ন নৃত্য দায়ী নয় ?
: ফটো সুন্দরী, লাক্স সুন্দরী জাতীয় প্রতিযোগিতা দায়ী নয় ?
: পত্রিকার আনন্দ, বিনোদন, রং-বেরং ইত্যাদি পাতাগুলো দায়ী নয় ?
: আর্মি স্টেডিয়ামে ভারতীয় শিল্পীদের অশ্লীল যৌন উত্তেজক গান (যেমন ‘সুনিধি চৌহান ইন ঢাকা , ০৪-০১-২০১৩) দায়ী নয় ?
: IPL / BPL এর নগ্ন নৃত্য দায়ী নয় ?
: ফটো সুন্দরী, লাক্স সুন্দরী জাতীয় প্রতিযোগিতা দায়ী নয় ?
: পত্রিকার আনন্দ, বিনোদন, রং-বেরং ইত্যাদি পাতাগুলো দায়ী নয় ?
:
উম্মুক্ত নারী দেহের প্রদর্শনী সম্বলিত বিজ্ঞাপন দায়ী নয় ?
:
এক কথায় যাবতীয় অবৈধ দর্শন দায়ী নয় ?
কুকুর যেমন
কুকুরীর খোঁজে পাগল হয়ে যায়, কিন্তু কাকে কামড় দেয় তার ঠিক নেই। ঐ নর দানবের
অবস্থাও তদ্রূপ । এই সমাজ কৌশলে তার মনুষ্যত্ব ধ্বংস করেছে ;
জাগ্রত করে দিয়েছে তার ভিতরের পশুত্বকে। ফুলের সৌরভে সে মোহিত হবে না। অতএব, যা
ঘটার তাই ঘটছে।
যদি সত্যকে
স্বীকার করার হিম্মৎ কারোর মাঝে থেকে থাকে তবে তাকে মানতেই
হবে যে দর্শন হল বীজ আর যেনা/ধর্ষণ হল ফল। মাঝখানের ধাপগুলো যেন Eve Teasing (
বা যৌন উত্যক্তকরণ ) এর নানা রূপ। তাই
ইসলাম খুব কড়াকড়ির সাথে এই বীজ কর্তনের ব্যবস্থা করেছে। যত ধরণের নোংরা অশ্লীল
দৃশ্য হতে পারে তা বাস্তব হোক অথবা ছবি/ভিডিও/ভারচুয়াল হোক, সব কিছু তো নিষিদ্ধ করেছেই, অধিকন্তু স্বামী/স্ত্রী নয় এমন নারী
পুরুষের পরস্পরের দেখা সাক্ষাতের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে,
ইসলাম মানুষের যৌনাচারণকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রিত করেছে যে, কোন ধরণেরই ধর্ষণ এমনকি উত্যক্তকরণও
সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এখানে খুব সহজবোধ্য কিন্তু
সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি উদাহরণ উল্লেখ করছি। মুসলমানরা রমজান মাসে রোযা রাখে। এমন কোন
স্থানে যেখানে মানুষ তো দূরের কথা, সাক্ষী হিসাবে কোন পোকামাকড় পর্যন্ত নেই,
সেখানেও সে কিছু পানাহার করে না। কারণ সে মনেপ্রাণে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করেছে
যে, ঐ পানাহারের কাজটি ‘হারাম’ এবং উহা করলে পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। অবৈধ দর্শনের ব্যাপারটিও ঠিক
তদ্রুপ। কারো মাঝে যদি এই চেতনে জাগ্রত হয় যে, এই কর্মের জন্য (পবিত্র হাদীস
শরীফের বর্ণনা অনুযায়ী) কিয়ামতের মাঠে চোখের মধ্যে গলিত সীসা ঢেলে দেয়া হবে, তখন ঐ
ব্যক্তি কর্তৃক যেনা/ধর্ষণ কিভাবে সম্ভব
? এমন একজন ব্যক্তি আর যে ব্যক্তি আইনের ভয়ে ‘ধর্ষণ করতে যায় না’ এদের উভয়ের মাঝে
আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে। সুতরাং সমাজকে ধর্ষণমুক্ত করার বেলাতেও উভয়ের অবদানে
আকাশ-পাতাল পার্থক্য চিরকাল ছিল এবং ভবিষ্যতেও তাই থাকবে।
ধর্ষণের
শাস্তি
সকল ধরণের
সম্ভাবনা তিরোহিত করার পরও সমাজে ২-৪ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে পারে। এটা অনেকটা এরূপ
যে, সবকিছু সঠিক দেখে গাড়ী চলতে শুরু করল। চালকও দক্ষ, রাস্তাঘাটও ঝুঁকিমুক্ত।
পারিপার্শ্বিকতা সম্পূর্ণ অনুকূলে। দুর্ঘটনার সম্ভাবনা শুন্যের কোঠায়। তারপরও
দুর্ঘটনা ঘটল। সকল ধরণের অবৈধ দর্শনমুক্ত একটি পবিত্র সমাজে যেনা/ ধর্ষণের ঘটনা
তেমনি একটা ব্যাপার। লক্ষ্যণীয় যে, ক্ষমার
ধর্ম ইসলাম এক্ষেত্রে ক্ষমা তো করেই নি, বরঞ্চ (যেনা ও ধর্ষণ, উভয় ক্ষেত্রে) কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছে যা
নিম্নে বর্ণনা করা হল।
(ক). যেনাকার যদি অবিবাহিত/অবিবাহিতা হয়,
তবে ১০০ টি বেত্রাঘাত করতে হবে। (খ). যেনাকার
বিবাহিত/বিবাহিতা হলে ‘রজম’ করতে হবে ( অর্থাৎ
কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে পাথর ছুড়ে তাকে হত্যা করতে
হবে )।
(গ).ধর্ষণের শাস্তিও একই
প্রকারের। তবে এক্ষেত্রে শাস্তিটা
কেবল ধর্ষকের প্রতিই প্রযোজ্য হবে, ধর্ষিতা নিস্তার পাবে।
(ঘ). এই শাস্তি প্রকাশ্যে প্রয়োগ করতে হবে।
উপরোক্ত (ঘ) এর
পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, এতে দুটো উপকার নিহিত আছে :
(১) যেনা/ধর্ষণ –এর প্রতি এবং এই অপকর্মকারীর প্রতি সাধারণভাবে ঘৃণার সৃষ্টি হয়। (২) ভবিষ্যতে যাদের মধ্যে যেনা/ধর্ষণ –এর কুচিন্তা জাগ্রত হতে পারে, তারা যেন আগেই আতংকগ্রস্থ ও ভীত হয়ে ঐ পথ পরিহার করে।
প্রসঙ্গতঃ এই কথাটি আলোচনা করা প্রয়োজন মনে করি যে
ব্যভিচারের / ধর্ষণের এই শাস্তি কে
প্রয়োগ করবে ? আপনি,
আমি কিম্বা সে ? কখনই নয়। এটা প্রশাসনের
দায়িত্ব
। রাষ্ট্রপ্রধান
বা তার প্রতিনিধি এই দায়িত্ব পালন করবে। তাদের হাতে ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও
তারা যদি এই মহান দায়িত্ব পালন না করে তাহলে তারা গুনাহগার এবং পরকালে
কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হবে। শরীয়ত সাধারণ জনগণ ও আলেম সমাজের উপর এই দায়িত্ব অর্পণ
করে নাই । মহান আল্লাহর প্রজ্ঞাময় বিধান জনগণ ও শাসক
গোষ্টিকে জানিয়ে দেয়াটাই শুধু তাদের দায়িত্ব
ও কর্তব্য।
এখানে একটি
মৌলিক বিষয় হৃদয়ঙ্গম করা উচিত। ইসলামের বিধান সমূহ মানুষের স্রষ্টার তরফ থেকে
অনুগ্রহ স্বরূপ প্রদত্ত । এছাড়া দুনিয়াতে
আর যত বিধান আছে তার সবগুলোই মানুষের তৈরি । আর তাই
ইসলামী বিধানের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজকে পরিশুদ্দ করা, মানুষ যেন ধর্ষণের পথে পা না বাড়ায় সে ব্যবস্থা করা।
অন্যদিকে মানব রচিত সকল আইন কানুনের লক্ষ্য হল ধর্ষকের শাস্তি প্রদান, ধর্ষণ কমানো
নয়। এ যেন “চোরেরে কয় চুরি কর, গৃহস্থরে কয় ধরো ধরো ।”
বোকার
স্বর্গে বাসকারীরাই কেবল এ কথা ভাবতে পারে যে মানব মস্তিষ্কপ্রসূত আইন করে সমাজকে ধর্ষণ মুক্ত করা সম্ভব। এ
প্রসঙ্গে একটি শিক্ষা মূলক গল্প মনে পড়ছে। এক কৃষক বাজার থেকে শুঁটকী কিনে এনে
বারান্দায় ছড়িয়ে রেখে ঘুমাতে যায়। বউ ডেকে বলে, “কোন
পাত্রের ভিতরে রেখে ঢাকনা বন্ধ করে রাখ। তা নাহলে বিড়াল এসে সব খেয়ে ফেলবে।” কৃষক হুংকার দিয়ে বলল, “ অসম্ভব! বিড়ালের বিরুদ্ধে
কঠোর আইন
জারী করছি। ১ টা শুঁটকী খেলে ১০ টি বেত, ২ টি খেলে ২০ টি বেত এবং এভাবে বেতের
পরিমাণ বাড়বে।” এই না বলে কৃষক আইনটি এক টুকরো কাগজে
লিখে শুঁটকীর পাশে রেখে দিল। বিড়ালের উদ্দেশ্যে হেড়ে গলায় আইনটি কয়েকবার পড়ে
শুনায়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত মনে ঘুম দিল। রাতে
বিড়াল এল এবং যা করার তা করল। সকালে ঘুম থেকে ওঠে সব কিছু দেখে কৃষক বেচারা মূর্ছা
গেল। কৌতুকটিতে কেবল হাস্য-রসই প্রধান
বিষয় নয়, বরং এর তাৎপর্য টুকুই আসল। বিড়ালের ধর্ম হল, উন্মুক্ত শুঁটকীর উপর
ঝাঁপিয়ে পড়া। ঠিক একই স্বভাব হল বখাটে ও চরিত্রহীন পুরুষদের ।
উম্মুক্ত, অর্ধোন্মুক্ত
নারী দেখলে তারা হুমড়ি খেয়ে পড়বেই পড়বে।
প্রমাণস্বরূপ এমন কিছু দেশের কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরছি যে সকল দেশে ধর্ষণের বেলায়
কঠোর আইন আছে বটে, কিন্তু নারীরা যেখানে উন্মুক্ত।
ধর্ষণ
|
Rate per
100,000 population
|
|||||||
Country/territory
|
2003
|
2004
|
2005
|
2006
|
2007
|
2008
|
2009
|
2010
|
Mozambique
|
0.5
|
0.3
|
0.2
|
0.2
|
0.2
|
0.2
|
||
Uganda
|
2.0
|
2.0
|
2.6
|
2.6
|
2.0
|
4.9
|
1.9
|
2.1
|
Zimbabwe
|
30.6
|
39.7
|
38.1
|
39.6
|
38.2
|
25.6
|
||
Algeria
|
2.3
|
1.9
|
1.1
|
1.5
|
2.5
|
2.4
|
||
Egypt
|
0.0
|
0.0
|
0.1
|
0.1
|
0.1
|
0.1
|
||
Botswana
|
88.5
|
92.9
|
||||||
Lesotho
|
85.3
|
88.3
|
82.7
|
|||||
Swaziland
|
72.1
|
77.5
|
||||||
Bahamas
|
27.2
|
22.2
|
41.1
|
35.4
|
32.2
|
22.7
|
||
Grenada
|
22.4
|
21.4
|
29.0
|
29.9
|
54.8
|
30.6
|
||
Jamaica
|
25.5
|
24.4
|
||||||
Saint Kitts and Nevis
|
30.9
|
28.6
|
||||||
Saint Vincent and the Grenadines
|
60.8
|
80.0
|
45.9
|
55.0
|
33.0
|
49.4
|
25.6
|
|
Trinidad
and Tobago
|
23.3
|
25.4
|
19.6
|
23.9
|
17.7
|
18.5
|
||
Costa
Rica
|
13.8
|
14.2
|
12.6
|
11.1
|
36.7
|
|||
El
Salvador
|
19.6
|
18.8
|
12.3
|
11.0
|
||||
Mexico
|
13.0
|
12.7
|
12.9
|
13.0
|
12.7
|
13.3
|
13.2
|
|
Nicaragua
|
24.4
|
27.7
|
31.6
|
|||||
Panama *
|
19.8
|
23.8
|
24.0
|
25.5
|
20.9
|
23.4
|
28.3
|
|
Bolivia
(Plurinational State of)
|
12.4
|
12.2
|
15.2
|
16.6
|
20.4
|
26.1
|
||
Chile
|
10.4
|
11.4
|
12.1
|
12.4
|
11.9
|
13.3
|
||
Ecuador
|
11.5
|
9.4
|
11.2
|
10.9
|
||||
Peru
|
22.3
|
21.0
|
22.7
|
23.6
|
25.6
|
26.6
|
23.5
|
|
Suriname
|
38.2
|
45.2
|
||||||
Bermuda
|
56.6
|
67.3
|
||||||
Canada
|
1.7
|
1.8
|
1.8
|
1.7
|
1.6
|
1.5
|
1.4
|
1.7
|
United States of America
|
32.2
|
32.3
|
31.8
|
31.5
|
30.6
|
29.8
|
29.0
|
27.3
|
Tajikistan
|
0.8
|
0.8
|
0.9
|
0.7
|
0.8
|
0.5
|
||
Turkmenistan
|
0.8
|
0.8
|
0.6
|
0.6
|
||||
Japan
|
2.0
|
1.7
|
1.6
|
1.5
|
1.4
|
1.3
|
1.1
|
1.0
|
Mongolia
|
15.5
|
15.0
|
12.6
|
12.2
|
13.5
|
13.3
|
12.2
|
12.4
|
Republic
of Korea
|
12.7
|
13.5
|
||||||
Philippines
|
3.7
|
3.5
|
3.5
|
3.0
|
2.7
|
2.9
|
6.3
|
|
Singapore
|
2.7
|
2.5
|
2.9
|
2.7
|
||||
India
|
1.6
|
1.6
|
1.7
|
1.8
|
1.8
|
1.8
|
1.8
|
|
Maldives
|
0.7
|
0.3
|
1.6
|
2.9
|
||||
Armenia
|
0.1
|
0.3
|
0.5
|
0.2
|
0.2
|
0.5
|
0.5
|
0.4
|
Azerbaijan
|
0.6
|
0.3
|
0.5
|
0.4
|
0.4
|
0.3
|
0.4
|
0.2
|
Bahrain
|
2.9
|
4.0
|
3.4
|
2.1
|
2.3
|
3.4
|
||
Georgia
|
1.1
|
1.4
|
3.1
|
3.8
|
3.5
|
2.3
|
1.9
|
1.9
|
Israel
|
20.4
|
18.5
|
19.1
|
18.4
|
17.5
|
|||
Jordan
|
1.5
|
2.0
|
||||||
Lebanon
|
1.0
|
0.5
|
||||||
Qatar
|
1.7
|
1.8
|
||||||
Syrian Arab
Republic
|
0.7
|
0.5
|
0.7
|
0.6
|
0.6
|
0.8
|
||
Finland
|
11.0
|
11.4
|
11.3
|
11.6
|
14.0
|
17.2
|
12.4
|
15.2
|
Iceland
|
23.8
|
17.4
|
25.3
|
23.9
|
28.5
|
21.9
|
24.7
|
|
Norway
|
15.5
|
16.1
|
17.3
|
18.0
|
20.0
|
19.8
|
20.6
|
19.2
|
Sweden
|
25.0
|
25.2
|
41.9
|
46.3
|
51.8
|
59.0
|
63.8
|
63.5
|
U. K. (England & Wales)
|
25.1
|
26.4
|
27.0
|
25.6
|
23.4
|
24.0
|
27.5
|
28.8
|
U. K. (Northern Ireland)
|
21.4
|
21.0
|
20.0
|
25.7
|
22.1
|
20.7
|
23.6
|
27.7
|
U. K. (Scotland)
|
15.7
|
17.7
|
19.1
|
18.0
|
17.7
|
15.9
|
17.0
|
|
Belgium
|
27.7
|
28.4
|
29.1
|
30.5
|
30.7
|
29.5
|
27.7
|
27.9
|
France
|
17.3
|
17.3
|
16.4
|
15.9
|
16.4
|
16.5
|
16.2
|
|
Germany
|
10.6
|
10.7
|
9.9
|
9.8
|
9.1
|
8.8
|
8.9
|
9.4
|
Netherlands
|
10.5
|
11.1
|
15.2
|
14.6
|
12.7
|
11.6
|
11.2
|
9.2
|
Australia
|
91.9
|
94
|
93
|
89
|
79.5
|
|||
New Zealand
|
24.0
|
28.3
|
27.0
|
26.4
|
26.1
|
25.8
|
সুত্রঃ Wikipedia, the free encyclopedia (পরিসংখ্যানটি অনেক বড়। আমি < ৩ এবং > ১০ হিসাবে যারা পড়ে, কেবল তাদেরকেই নিয়েছি)।
এবারে UNICRI
(United Nations Interregional Crime and Justice Research Institute) এর ২০০২ সালের প্রতিবেদনটি লক্ষ্য করা হোক। ইহাতে মোট জনসংখ্যার % হারে
সংঘটিত ধর্ষণ সংখ্যা অনুসারে বিভিন্ন দেশকে ‘রাঙ্কিং (ranking )’ করা হয়েছে ।
আমেরিকার কথা একটু বিশদ করেই (নিম্নে) উল্লেখ করছি। কারণ আমেরিকাতে আছে পূর্ণ মাত্রার নারী স্বাধীনতা, উন্নততম প্রযুক্তি আর ধর্ষণের বিরুদ্দে কঠোর আইন। সকল ধরণের যৌন চাহিদা মেটাতে কোন ধরণের প্রতিবন্দকতা নেই, কেবল দু’পক্ষের পারস্পরিক সমঝোতা থাকলেই হল। যুক্তি বলে, আমেরিকাতে ধর্ষণের প্রয়োজন নেই, ধর্ষণ সংঘটিত হবে না। কিন্তু বাস্তবতা বলে ভিন্ন কথা।
- Every 45 seconds someone in the United States is sexually assaulted.
- 1 out of every 7 women currently in college has been raped, however, 9 out of 10 women raped on campus never tell anyone about the rape.
- More than 61.5% of rapes are never reported to law enforcement.
- 74% of sexual assaults are perpetrated by assailants well known to the victim.
- A female child victim is 7 times more likely to be re-victimized as an adult.
- The United States has the world’s highest rape rate of all countries that publish such data- 13 times higher than England and more than 20 times higher than Japan.
- An American woman is 10 times more likely to be raped than to die in a car crash.
আছে অবাধ মেলামেশার সকল সুযোগ,
তবে ধর্ষণের বিরুদ্ধে রয়েছে কঠোর আইন এবং
সেটা প্রায় সময়ে কার্যকরীও করা হয়ে থাকে, তেমন একটি দেশ হল U.K. ঐ দেশটির অবস্থাও এক নজর দেখা যাক।
In January 2013, the Ministry of Justice (MoJ), Office for National Statistics (ONS) and Home Office released its first ever joint Official Statistics bulletin on sexual violence, entitled An Overview of Sexual Offending in England and Wales.
It reported that:
*Approximately 85,000 women are raped on average in England and Wales every year
*Over 400,000 women are sexually assaulted each year
*1 in 5 women (aged 16 – 59) has experienced some form of sexual violence since the age of 16.
In January 2013, the Ministry of Justice (MoJ), Office for National Statistics (ONS) and Home Office released its first ever joint Official Statistics bulletin on sexual violence, entitled An Overview of Sexual Offending in England and Wales.
It reported that:
*Approximately 85,000 women are raped on average in England and Wales every year
*Over 400,000 women are sexually assaulted each year
*1 in 5 women (aged 16 – 59) has experienced some form of sexual violence since the age of 16.
(সূত্র:http://rapeneverfunny.wordpress.com/uk-rape-statistics/)
এবং বিধ যত তথ্য-উপাত্ত-ইতিহাস আছে, সবগুলো একটি কথাই বলে যে, কেবলমাত্র আইনের দ্বারা একটি সমাজকে ধর্ষণমুক্ত করা অসম্ভব। এই কাজের জন্য আইন সহায়ক, প্রধান নয়। অবৈধ দর্শন মূল, আর যেনা/ধর্ষণ ফল। মাঝখানের স্তরগুলো শাখা-প্রশাখা। সুতরাং যেনা/ধর্ষণ নামক বৃক্ষ/ব্যাধি থেকে সমাজকে মুক্ত রাখতে হলে সহজতম এবং দ্রুততম উপায় হল এই বৃক্ষের বা ব্যাধির মূল কেটে দেয়া। আর ওহীর ধর্ম ইসলাম এই কাজটিকেই সবচাইতে বেশী প্রাধান্য দিয়েছে । কারণ ইসলাম চায় যে, গোটা সমাজ এবং বিশ্ব ধর্ষণমুক্ত হোক। কেহ মানুক কিংবা না মানুক, এটা দিবালোকের ন্যায় উজ্জ্বল ,সত্য এবং সুস্পষ্ট।
এবং বিধ যত তথ্য-উপাত্ত-ইতিহাস আছে, সবগুলো একটি কথাই বলে যে, কেবলমাত্র আইনের দ্বারা একটি সমাজকে ধর্ষণমুক্ত করা অসম্ভব। এই কাজের জন্য আইন সহায়ক, প্রধান নয়। অবৈধ দর্শন মূল, আর যেনা/ধর্ষণ ফল। মাঝখানের স্তরগুলো শাখা-প্রশাখা। সুতরাং যেনা/ধর্ষণ নামক বৃক্ষ/ব্যাধি থেকে সমাজকে মুক্ত রাখতে হলে সহজতম এবং দ্রুততম উপায় হল এই বৃক্ষের বা ব্যাধির মূল কেটে দেয়া। আর ওহীর ধর্ম ইসলাম এই কাজটিকেই সবচাইতে বেশী প্রাধান্য দিয়েছে । কারণ ইসলাম চায় যে, গোটা সমাজ এবং বিশ্ব ধর্ষণমুক্ত হোক। কেহ মানুক কিংবা না মানুক, এটা দিবালোকের ন্যায় উজ্জ্বল ,সত্য এবং সুস্পষ্ট।
বিবাহ
সমাজকে
সুস্থ–সুন্দর রাখার জন্য ইসলাম আরো একটি বিষয়ের উপর প্রচণ্ড
গুরুত্ব দিয়েছে: বিবাহ । সুস্পষ্ট
ভাষায় নির্দেশ দেয়া হয়েছেঃ
“... ৩ টি বিষয়ে দেরী কর না। (১) নামায যখন সময় হয়ে যায়; (২) জানাজা যখন তা উপস্থিত হয়; (৩) অবিবাহিতা নারীর বিবাহ, যখন তুমি উপযুক্ত পাত্র পাও ।’’(তিরমিজী)
“... ৩ টি বিষয়ে দেরী কর না। (১) নামায যখন সময় হয়ে যায়; (২) জানাজা যখন তা উপস্থিত হয়; (৩) অবিবাহিতা নারীর বিবাহ, যখন তুমি উপযুক্ত পাত্র পাও ।’’(তিরমিজী)
ইসলামে
নামাজের গুরুত্ব সর্বজনবিদিত। আর দাফনের বিষয়টি প্রাকৃতিক ভাবেই সহজবোধ্য। এই ২ টি
মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজের সাথে একই পাল্লায় রাখা হয়েছে বিবাহকে। সুতরাং বিবাহের
গুরুত্ব সহজেই অনুমেয়। একজন বিবাহিত/বিবাহিতা কর্তৃক যে কোন ধরণের যৌন অপরাধ
সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। বক্তব্যটি বুঝতে হলে একটু কল্পনার আশ্রয় নেয়া
দরকার।এমন একটি সমাজ যেখানে নেই অবাধ দর্শনের/মেলামেশার কোন ব্যবস্থা, সেখানে একজন বিবাহিত ব্যক্তির পক্ষে ধর্ষণ করা
কত অসম্ভব! তারপরও যদি কেহ সীমালঙ্ঘন করে
? ইসলাম এখানে বড়ো বেশী কঠোর। তাকে ২য় বার অপরাধ করার কোন সুযোগই দেয়া হবে না। তার
শাস্তি ‘রজম’ করা।
ঠাণ্ডা
মাথায় উদার চিত্তে চিন্তা করলে যে কেহ বুঝবে যে বিবাহ সংক্রান্ত ব্যাপারে ইসলামের
বিধানটির চেয়ে অধিকতর উত্তম আর কিছু কল্পনাই করা যায় না । একটি ছেলে/মেয়ে যৌবনে
পৌঁছেছে অর্থাৎ তার মধ্যে এক নতুন ধরণের চাহিদা বা তাড়না অনুভূত হচ্ছে।
এই তাড়নার কারণে উদ্ভ্রান্ত হয়ে সে নানা ধরণের অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়তে পারে,
যেগুলোর চূড়ান্ত পর্যায় হল ধর্ষণ। এই জাতিয় অপকর্মের পেছনে একটি ছেলে বা মেয়ে যাতে
না ছোটে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা ও যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া ছেলে-মেয়ের প্রকৃত
হিতার্থীর আবশ্যিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
ইসলাম এক্ষেত্রে যুক্তিহীনভাবে কোন কল্পিত বয়সসীমা নির্দিষ্ট করেনি। অভিভাবককে বলা হয়েছে বয়ঃপ্রাপ্তির পর যথাসম্ভব দ্রুত বিবাহের ব্যবস্থা নিতে । কারণ পৃথিবীর সব লোক ঠিক একই বয়সে যৌবনত্ব অর্জন করে না, যেমন ঠিক একই বয়সে সবাই মরে না। অথচ আইনের প্রলেপ দিয়ে বিবাহ-কে ক্রমান্বয়ে কঠিন করা হচ্ছে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স যেখানে ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৮ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৬ ধার্য করা হয়েছে সেখানে ( ভারত ও নেপালের অনুকরণে ) বাংলাদেশে সেটা ধরা হয়েছে যথাক্রমে ২১ ও ১৮ ।(অবাক হব না যদি কোন দিন শুনি যে এদেশে বিয়ের সর্বনিম্ন সীমা ৩০ করা হয়েছে !) ফলাফল কী দাঁড়ায়। যত ধরণের যৌন অপরাধ আছে সব বাড়ছে, এবং সবশেষে ধর্ষণও। কিন্তু কেন এই অযৌক্তিক বয়ঃসীমা ধার্যকরণ। এটা কি এজন্য নয় যে, ঐ বয়সে পৌঁছার আগ পর্যন্ত ছেলে-মেয়েরা আপোষে যতই অপকর্ম করুক, তাতে আপত্তি নেই; আপত্তি কেবল ধর্ষণে। পক্ষান্তরে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রতিটি অপকর্মেই আপত্তি ইসলামের।
ইসলাম এক্ষেত্রে যুক্তিহীনভাবে কোন কল্পিত বয়সসীমা নির্দিষ্ট করেনি। অভিভাবককে বলা হয়েছে বয়ঃপ্রাপ্তির পর যথাসম্ভব দ্রুত বিবাহের ব্যবস্থা নিতে । কারণ পৃথিবীর সব লোক ঠিক একই বয়সে যৌবনত্ব অর্জন করে না, যেমন ঠিক একই বয়সে সবাই মরে না। অথচ আইনের প্রলেপ দিয়ে বিবাহ-কে ক্রমান্বয়ে কঠিন করা হচ্ছে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স যেখানে ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৮ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৬ ধার্য করা হয়েছে সেখানে ( ভারত ও নেপালের অনুকরণে ) বাংলাদেশে সেটা ধরা হয়েছে যথাক্রমে ২১ ও ১৮ ।(অবাক হব না যদি কোন দিন শুনি যে এদেশে বিয়ের সর্বনিম্ন সীমা ৩০ করা হয়েছে !) ফলাফল কী দাঁড়ায়। যত ধরণের যৌন অপরাধ আছে সব বাড়ছে, এবং সবশেষে ধর্ষণও। কিন্তু কেন এই অযৌক্তিক বয়ঃসীমা ধার্যকরণ। এটা কি এজন্য নয় যে, ঐ বয়সে পৌঁছার আগ পর্যন্ত ছেলে-মেয়েরা আপোষে যতই অপকর্ম করুক, তাতে আপত্তি নেই; আপত্তি কেবল ধর্ষণে। পক্ষান্তরে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রতিটি অপকর্মেই আপত্তি ইসলামের।
আলোচনার সংক্ষেপ সার হিসাবে বলা যায় যে, ধর্ষণ
বন্ধের জন্য ইসলাম ৩ দফা কর্মসূচী রেখেছেঃ
প্রথমতঃ অবৈধ দর্শন বন্ধ।
দ্বিতীয়তঃ উপযুক্ত বয়সে বিবাহ।
তৃতীয়তঃ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
প্রথমতঃ অবৈধ দর্শন বন্ধ।
দ্বিতীয়তঃ উপযুক্ত বয়সে বিবাহ।
তৃতীয়তঃ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
যেহেতু বাংলাদেশের প্রায় ৮৫% জনগণ
ইসলাম ধর্মের অনুসারী, সমবেত প্রচেষ্টায় ইচ্ছা করলে বাংলাদেশকে ধর্ষণমুক্ত করা যায়
। কিন্তু এই সদিচ্ছা কি আদৌ আমাদের আছে ?
আমাদের যাবতীয়
কর্মধারা কিন্তু অন্য কথা বলে।
অগ্যস্ত
যাত্রা
বাঙালী জাতির অনেক অনেক ঋণাত্মক বৈশিষ্টের মধ্যে এটাও অন্যতম যে এই জাতি বড়ই
অন্ধ অনুকরণপ্রিয়। পাশ্চাত্য সভ্যতার যাবতীয় কলুষিত দিকগুলোকে আমরা যে ভাবে আঁকড়ে
ধরছি তাতে এ আশঙ্কা দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে যে অচিরেই এদেশে এমন একটি জাতি গড়ে উঠবে যারা অবাধ
যৌন আচার, গ্রুপ সেক্স, সমকাম, লিভটুগেদার,
ব্লু-ফ্লিম ইত্যাদিতে অভ্যস্ত হবে। তিক্ত
হলেও এ কথা সত্য যে, এই নোংরা বিষয়গুলো দ্রুততর হওয়ার পেছনে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা, মিডিয়া ও
প্রযুক্তি ব্যাপক ভূমিকা রাখছে ।
উপসংহার
আসলে আমরা কি চাই ?
(১) একটি
ধর্ষণমুক্ত সমাজ ? না কি (২) এমন একটি
সমাজ যেখানে ধর্ষণ-গণধর্ষণ হবে নিত্যদিনের ব্যাপার আর সে সাথে চলতে থাকবে ধর্ষকের
বিচার ?
মূলতঃ
আমাদের চাওয়ার উপর নির্ভর করবে আমাদের ভবিষ্যৎ । বর্তমানে
আমরা সবাই দ্বিতীয়টির প্রতি সোচ্চার। কারণ
ধর্ষণ বৃদ্ধি করার জন্য যত ধরণের প্রভাবক দরকার সবগুলোই সমাজে বিদ্যমান এবং
দিন দিন বাড়ছে। কেহ যদি এগুলো কমানোর কথা বলে, তার বিরুদ্ধে সবাই উঠেপড়ে লাগে । অথচ আমরা স্বপ্ন দেখি একটি
ধর্ষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার । এতো হদ্দ বেওকুফের কাজ, রীতিমত আকাশ কুসুম কল্পনা !
আমরা সংগ্রাম করছি অবাস্তব নিয়মে । তাই বারংবার অবধারিত ভাবে পরাজিত হচ্ছি।
পৃথিবীর
বুকে ধর্ষণ নতুন কোন সমস্যা নয় । এটা অনেক আগে থেকেই ছিল এবং ইহার সঠিক
সমাধানও বর্ণিত আছে। এই সমাধান কেবল
তাত্ত্বিক পর্যায়ে সীমিত নয়, জগতের বুকে এটা প্রয়োগও হয়েছিল। জনাবে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক মক্কা বিজয়ের (৬৩০ খৃষ্টাব্দ)
পর সুদীর্ঘ কয়েকশ’ বৎসর যাবৎ সুবিশাল
ইসলামী সাম্রাজ্যে এতটুকু নিরাপত্তা ছিল যে একাকী একজন নারী যত ইচ্ছে ধন-সম্পত্তি
নিয়ে রাজ্যের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত নিঃশঙ্ক চিত্তে যেতে পারত, কেহ তার দিকে
ফিরেও তাকাত না। এটা ইতিহাস, গালগল্প নয়। যৌনতা আর হিংস্রতার সয়লাবে প্লাবিত সমাজে
নিমজ্জিত আমাদের পক্ষে এটা অবিশ্বাস্য মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু
“There are more things in heaven and
earth, Horatio,
Than
are dreamt of in your philosophy.”
(William Shakespeare, Hamlet, Act
1, Scene 5)
আমরা যদি
ধর্ষণমুক্ত তেমনি একটি সমাজ ফিরে পেতে চাই, তবে ইসলাম নির্দেশিত ঐ ব্যবস্থাপত্রের
পুনঃ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এটা করতে গিয়ে কে হাসল, কে ভেংচি দিল, কারা সব গেল
গেল বলে রব তুলল অতসব ভাবলে আর দ্বিধা করলে ধর্ষণ কমানো কিম্বা বন্ধ করা
কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। গত একশ’ বছরের ইতিহাস তাই প্রমাণ
করছে। তারপরও ধর্ষণ বন্ধের ব্যাপারে আমরা নিত্যনতুন আইন করছি, মিছিল-মিটিং করছি, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম
করছি; আরো হাস্যকর যে অর্ধোল্লুংগ নারীদেরকে নিয়ে সমাবেশ করছি। কিন্তু ইসলামের সেই অভ্রান্ত দিক নির্দেশনা গ্রহণ
করছি না। বরঞ্চ বলা যায় যে উহা গ্রহণ না
করার জন্য আমরা গোঁ ধরেছি।
অতএব, ঘুরেফিরে
সেই মূল প্রশ্নটিই পুনঃ পুনঃ ফিরে
আসে :
আমরা আসলে কি চাই ???
ঃসমাপ্তঃ
লেখক:
মোহাম্মদ সালেক পারভেজ
সহকারী অধ্যাপক,ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটি, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইল : sparvez@daffodilvarsity.edu.bd
১ম প্রকাশঃ ২৬ মে, ২০১৪, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন; থেকে BreakingNews.com.bd ওয়েবসাইটে ধারাবাহিকভাবে ৬ পর্বে প্রকাশিতঃ লেখাগুলো দেখার জন্য নিচের লিঙ্কগুলোতে ক্লিক করুনঃ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন