-->

বাবার কাঁধে

রাস্তার মাথায় একটি সুবিশাল সাইনবোর্ড। নতুন, সম্ভবতঃ কাল রাতে লাগানো হয়েছে। তাতে বড় বড় হরফে লেখাঃ জুন মাসের ৩য় রবিবার আজ বাবা দিবস বাবাকে তার প্রিয় জিনিসটি উপহার দিন সেলিম সাহেব একজন বাবা। তার নজরটা সাইনবোর্ডটির ওপর পড়ল। লেখাটাও মনের অজান্তে পড়া হয়ে গেল । কিন্তু তারপর ? ফেল ফেল করে তাকিয়ে থাকলেন । তাকিয়েই থাকলেন। সবকিছু যেন অর্থহীন ঠেকছে। * * * * * * বত্রিশটি বছর আগের কথা। মাস দিন তারিখ সব মিলে গেছে। তফাৎ কেবল ক্ষণটাতে। পুরোপুরি কাকতালীয় হয়েও হল না। আসলে কাকতালীয় বলে কিছু নেই। সবই বিধাতার ইচ্ছা। সেদিন বাদ এশা। সেলিম সাহেব অস্থির চিত্তে বারান্দায় পায়চারী করছেন। আড়াই বছরের মনিরকে পাশের রুমে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছেন। ওদিকে আঁতুড় ঘর থেকে মুনিরের মার কোঁকানির আওয়াজ আসছে। ঘণ্টা দুই হবে, প্রসব বেদনা উঠেছে। সেলিম সাহেবের অস্থিরতা কেবল বাড়ছে আর বাড়ছে। এক সময় বড় আপা বের হয়ে আসেন। কিন্তু কিছু বলার আগেই নবজাতকের কান্নার আওয়াজ সেলিম সাহেবের কানে প্রবেশ করে। মনিরের বোন হয়েছে। খুব সুন্দর। হাসিমুখে শুধান বড় আপা। শুকরিয়া , সব খবর ভাল তো ? জি, ভালো। আপনি এবার ঘুমাতে যান। আমরা সবাই আছি। 


* * * * * * মনিরের বোন বড় হচ্ছে। আদর করে নাম রাখা হয়েছে মনিরা । শৈশব পেরিয়ে স্কুলে ভর্তি হল। তারপরে একে একে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করল। বিয়ে হল।