খালেদের মনটা ভীষণ খারাপ। দেশে চলছে টানা
অবরোধ আর হরতাল। স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি-অফিস-আদালত- কল-কারখানা সবখানেই এক ধরণের
অচলাবস্থা। সরকার কিম্বা বিরোধীরা কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না।মাঝখান দিয়ে নাভিশ্বাস
ওঠছে আম-জনতার, বারো-তের পার হয়ে চৌদ্দটা বাজতে চলছে দেশের। মার্চ মাস, মানে
স্বাধীনতার মাস এসেছে। কিন্তু কারো মধ্যে তেমন কোন উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে না।
রাস্তাঘাটে সকলের মধ্যে কেমন যেন এক অজানা আতঙ্ক ভাব চোখে পড়ে, ঠিক যেমনটি ছিল
১৯৭১ সালে। ’৭১-এর কথা মনে
পড়তেই খালেদ খুঁজে বের করল তার প্রিয় ডায়েরীটি।
খালেদের
মনে পড়ল আনা ফ্রাংকের ডায়েরীর কথা। ওটা আজ বিশ্ব বিখ্যাত। আসলে ইহুদীরা জানে কার
ঢোল কোথায়, কখন এবং কিভাবে পেটাতে হয়। অপকর্মে তারা বিশ্বসেরা । অথচ ওদের প্রতি
বিন্দুমাত্র অবিচার হলে সেটা এমনভাবে ফলাও করে যে গোটা দুনিয়ায় ওদের প্রতি দরদ
উথলে ওঠে। এজন্যই কি মসী অসির চেয়ে শক্তিশালী ?

বিধ্বস্ত মন আর বিক্ষিপ্ত ভাবনা নিয়ে খালেদ ডায়েরীর পাতা
ওলটাতে থাকে। আচ্ছা, ওর এই ডায়েরী কি কখনো ছাপার অক্ষরে আলোর মুখ দেখবে!
আনমনে হেসে ফেলে খালেদ।আরে দূ---র! মাথাটাই গোলমাল হয়ে গেছে। নচেৎ এসব বিদঘুটে
ভাবনা আসছে কেন ? ও কী তেমন কেউ না কী যে ওর ডায়েরী কেহ ছাপাতে যাবে ? তাছাড়া
বর্তমান প্রজন্মের কাছে একাত্তর কী আদৌ মূল্যবান কিছু ?